ছাতকে ১০টাকা কেজির চাল বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম ও লুঠপাটের অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকারের সেবামূলক এ খাতের সুফল থেকে বি ত হচ্ছে অসহায়-গরীব লোকজন। খাদ্য অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ১৩ইউনিয়নে ২৬জন ডিলারের মাধ্যমে ১লাখ ৪২হাজার ৬০টি হতদরিদ্র পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে ১০টাকা কেজিতে চাল বিতরণ এবং মাসোহারা প্রতি পরিবারকে দেয়া হবে ৩০কেজি করে চাল। ডিলাররা সরকারের কাছ থেকে প্রতি কেজি সাড়ে ৮টাকায় চাল কিনে বিক্রি করবে ১০টাকা দরে। এখানে সব ডিলাররা হচ্ছেন, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগও তাদের আর্শীবাদপুষ্ট। এক ইউপির অধিবাসীকে অন্য ইউপিরও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাইসমিল মালিকদের ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। সরকার হতদরিদ্রদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ১০টাকা কেজির চাল বিক্রির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ছাতকের সর্বত্র এ প্রকল্পে হরিলুট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে নোয়ারাই, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড়, ভাতগাঁও, জাউয়া, চরমহল্লা, ছৈলা-আফজালাবাদ, দোলারবাজার, কালারুকা, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছাতক ও ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পৃথক সভায় চাল বিতরনে ব্যাপক লুঠপাটের অভিযোগ ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। জানা যায়, প্রত্যেক সুফলভোগীর ভোটার কার্ডের ফটোকপিও ছবি সংগ্রহ করে ডিলাররা সুফলভোগীর হাতে ফটোসহ তাদের তৈরী ‘বিতরণ কার্ড’ পৌছে দেবে। এরপর বিতরণকৃত কার্ডের বিপরীতে মাথা পিছু ৩০কেজি করে চাল প্রাপ্তির জন্যে আবেদন করতে পারবে। কিন্তু সরকারের এ নিয়মকে মারাত্মকভাবে লংঘন করছেন ডিলাররা। বিতরণ কার্ড তৈরী না করে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা খাদ্য বিভাগের সাথে যোগসাজসে অবৈধভাবে গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করে লুঠপাট করে যাচ্ছেন। টাকা খাদ্য অফিসার, এলএসডি, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, ডিলারও আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে ভাগ-ভাটোয়ারা হয়ে থাকে বলে জানাযায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার লাফার্জ সুরমা মার্কে, গনেশপুর-মাদরাসাবাজার কেশবপুর পয়েন্টে, লক্ষীবাউরবাজার, গোবিন্দগঞ্জবাজার, ধারণবাজার, দড়ারপারবাজার, জাতুয়াবাজার, গাবুরগাঁও পয়েন্ট, মৈশাপুরবাজার, টেটিয়ারচরবাজার, জালালীচরবাজার, কৈতক পয়েন্ট, জাউয়াবাজার, পরগনাবাজার, তাজগঞ্জবাজার, আলমপুর বাজার, বুরাইয়াবাজার, লাকেশ্বরবাজার, বাংলাবাজার, কালারুকাবাজার, হাসনাবাদবাজার, কালিপুরবাজার, কামারগাঁওবাজারে চাল বিতরণ করা হয়নি। অনেকে বিতরন কার্যক্রম উদ্বোধন করেই নাম মাত্র লোকদের মধ্যে বিতরণ করেই তা কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য জানান, কোন এলাকায় চাল বিতরন হচ্ছে তার কোন হদিস নেই। তবে একজন ব্যক্তিও চাল পাচ্ছেনা বলে তারা দাবী করেন। দক্ষিণ খুরমা ইউপির বরাদ্ধকৃত ৮মেঃটন চালের মধ্যে প্রায় ২মেঃটন কার্ডের মাধ্যমে বিক্রি করলেও ৬মেঃটন লাপাত্তা হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউপির দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আনিছুর রহমান বলেন, স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মিলে ডিলার নিয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে অফিসের কিছু করার নেই। উপজেলা খাদ্য অফিসার শাহাব উদ্দিন বলেন, ১০টাকার চাল বিক্রিতে মৌখিকভাবে অনিয়মের অনেক অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু লিখিত না পাওয়ায় ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। উপজেলা নির্বার্হী অফিসার আরিফুজ্জামান বলেন, জাউয়াবাজারে চাল বিক্রির অনিয়মের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে যারা এধরনের অপকর্ম করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।